অনুচ্ছেদ : শহীদ মিনার

শহীদ মিনার

শহীদ মিনার
হচ্ছে আমাদের বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। এর সাথে জড়িয়ে আছে শহীদদের আত্মত্যাগের
ইতিহাস। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয়। আজকের বাংলাদেশ তখনকার পাকিস্তানের অংশ
ছিল। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠি ১৯৪৮ সাল থেকেই সমগ্র পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের
মাতৃভাষা বাংলার ছাত্র সমাজ এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু ১৯৫২ সালে উর্দুকে পাকিস্তানের
একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা ঘোষণার প্রতিবাদে বাংলার ছাত্র সমাজ একুশ ফেব্রুয়ারি ছাত্র ধর্মঘট
ও রাষ্ট্র ভাষা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। পাকিস্তান সরকার সে দিন সভা-সমাবেশ
বিক্ষোভ প্রদর্শন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ১৪৪ দ্বারা জারি করে। কিন্তু ছাত্ররা ১৪৪ দ্বারা
ভঙ্গ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলে পুলিশ মিছিলের উপর গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে সালাম,
জব্বার, রফিক, বরকত ও শফিউর সহ আরো অনেক নিহত হন। এরপর ২৩শে ফেব্রুয়ারি বিকাল থেকে শুরু করে সারারাত জেগে ছাত্ররা শহীদদের
স্মরণে যে স্মৃতিস্তম্ভ প্রতিষ্ঠা করে তাকেই বলে শহীদ মিনার। ২৪ শে ফেব্রুয়ারি শহীদ শফিউরের পিতা আনুষ্ঠানিক ভাবে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন। এই শহীদ মিনারটি একুশের
শোক সংগ্রাম ও শপথের প্রতীক। শহীদ মিনারের স্তম্ভগুলো মাতৃভূমি, মাতৃভাষার তথা মা ও
তার শহীদ সন্তানের প্রতীক। এটি হচ্ছে সকল অন্যায় অবিচার, অত্যাচার, নির্যাতন ও অসুন্দরের
বিরুদ্ধে প্রতিবাদের চিরন্তন স্মারক। এ জন্য প্রতি বছর একুশ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস বা
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। আমাদের
সাংস্কৃতিক চেতনার বিকাশে শহীদ মিনার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রেরণার প্রতীক। এ চেতনাকে
পাথেয় করেই আমাদের নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে যেতে হবে।

Leave a Comment