الانشاء : خِدْمَةُ الْخَلْقِ | রচনা : সৃষ্টির সেবা | Alim Arabic 2nd Paper – আলিম আরবি দ্বিতীয় পত্র

সৃষ্টির সেবা

উপস্থাপনা :

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সৃষ্টির সেবা করার জন্য আমাদেরকে শ্রেষ্ঠ জাতি করে সৃষ্টি করেছেন। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক রাসূলদের সরদারের ওপর, যাঁকে জগতের রহমতস্বরূপ প্রেরণ করা হয়েছে। আর তাঁর পরিবার ও সাহাবীদের ওপর বর্ষিত হোক ।

সৃষ্টির সেবার পরিচয় :

সৃষ্টির সেবা হলো সৃষ্টির প্রয়োজনে সাহায্য ও সহযোগিতা করা এবং সমাজ ও তাদের জন্য কল্যাণকর কোনো কাজ করা।

সৃষ্টির সেবার গুরুত্ব :

সৃষ্টির সেবা মানুষের প্রশংসনীয় গুণ। যে ব্যক্তি সৃষ্টির সেবা থেকে নিজেকে বিরত রাখবে সে মানবতাশূন্য। আর যে ব্যক্তি অন্যের সাহায্যে ও সৃষ্টির সেবায় নিয়োজিত থাকবে, সে আল্লাহর প্রিয়ভাজনদের একজন।

কুরআনের আলোকে সৃষ্টির সেবা :

আল্লাহ তায়ালা ইসলামে সৃষ্টির সেবার ব্যাপারে অনেক গুরুত্ব প্রদান করেছেন। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, “আত্মীয়কে তার হক দাও আর মিসকিন ও মুসাফিরকে”।

আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন, “গোলাম আযাদ করা বা অভাবী নিকটাত্মীয় অথবা অসহায় মিসকিনকে অনাহারের সময় খাবার খাওয়ানো।”

হাদীসের আলোকে সৃষ্টির সেবা :

নবী কারীম (স) ইরশাদ করেন, “মুসলমান মুসলমানের ভাই, সে তার প্রতি জুলুম করবে না এবং তাকে বিপদে ফেলবে না। আর যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করবে, আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের একটি কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ্ তার কেয়ামতের দিনের একটি বিপদ দূর করবেন”।

দার্শনিকদের মতে সৃষ্টির সেবা :

সকল ধর্মের দার্শনিকগণ সৃষ্টির সেবার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করেছেন। শেখ সাদী (র) বলেন, “দ্বীন কেবল জায়নামাজ ও আল্লাহর যিকিরের মাঝে সীমাবদ্ধ নয়; বরং সৃষ্টির সেবার মাঝেও দ্বীন রয়েছে” 

স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন- জীবে দয়া করে যেজন সেজন সেবিছে ঈশ্বর। স্টীল বলেছেন- সবচেয়ে হিতকর কাজ হলো জনসেবা।

কবি কামিনী রায় তাঁর প্রসিদ্ধ কবিতায় বলেন- আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী পরে, সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।

সৃষ্টির সেবার ফলাফল :

সৃষ্টির সেবার মাধ্যমে মানবিক সম্পর্ক ও মানুষের মাঝে ভ্রাতৃত্ব সুদৃঢ় হয়। এজন্য বলা হয়, “ইবাদতের মাধ্যমে জান্নাত অর্জিত হয় আর সৃষ্টির সেবার মাধ্যমে স্রষ্টা অর্জিত হয়”।

উপসংহার :

সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও পরকালে মুক্তি লাভের ক্ষেত্রে সৃষ্টির সেবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কাজেই আমাদের দায়িত্ব হলো সৃষ্টির সেবার ক্ষেত্রে ইসলামের আদর্শ গ্রহণ করা।

 

Leave a Comment