বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ ও এর প্রতিকার

‘বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ ও এর প্রতিকার’ সম্বন্ধে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন
রচনা করো।


প্রতিবেদনের শিরোনাম : বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ ও এর
প্রতিকার
প্রতিবেদকের নাম : শাহরিয়ার নাফিস সিফাত ও রোমেনা নাজনীন
এলাকার
নাম :
ঢাকা
প্রস্তুতের সময় ও তারিখ : ১২/০৫/২০২১

বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ ও এর প্রতিকার

বর্তমান সভ্যতা সর্বতোভাবে বিদ্যুৎ নির্ভর হলেও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকট অনেক
প্রকট। এ তীব্র বিদ্যুৎ ঘাটতি এদেশের জনজীবনকে বিষিয়ে তুলছে। প্রাত্যহিক জীবনযাপন
থেকে শুরু করে শিল্পায়ন, কৃষি উৎপাদন, শিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রেই মানুষ দারুণভাবে
ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দিনে ও রাতে একাধিকবার দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মাত্রা এতোটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে,বিদ্যুৎ সংযোগ যে আছে মাঝে
মাঝে সে কথা ভুলে যেতে হয়।

অনুসন্ধানে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের নিম্নলিখিত কারণগুলো ধরা পড়েছে-
১. দেশের
বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রয়োজন প্রায় ১৩০০০ মেগাওয়াট, কিন্তু
উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১০,০০০ মেগাওয়াট।

২. বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ার
আনুপাতিক হারে জোগান বাড়েনি গত পঁচিশ বছরে।

৩. আমলাতান্ত্রিক ও
অস্থিতিশীল রাজনৈতিক কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর কোনো সংস্কার হয়নি।

৪.
বিদ্যুৎ উৎপাদনের ঘাটতি সারাদেশে সমভাবে বন্টন করলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট কিছুটা হলেও কম
হতো।

৫. জলবিদ্যুৎ ও তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে পর্যাপ্ত পরিমাণে কাঁচামালের
জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

৬. নতুন উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের
অর্থ,প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির অভাব।

৭. সরকারের পরনির্ভরশীল মনোভাব।

৮.
অবৈধ সংযোগ,সিস্টেম লস ও কৃজ্ঞতার অভাব।

৯. রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও
প্রশাসনিক জটিলতা।

বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধি করে,বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পরিমাণ কমিয়ে আনা একটি সময়সাপেক্ষ
ব্যাপার। নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করলে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পরিমাণ
পর্যায়ক্রমে কমে আসবে-

১. প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন ও পুরনো বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র
সংস্কার করা।

২. অবৈধ সংযোগ বিছিন্ন করা ও কৃচ্ছ্রতা সাধনের মাধ্যমে
অপচয় রোধ করা।

৩. উৎপাদিত বিদ্যুৎ সুষমভাবে বন্টনের ব্যবস্থা করা।

৪.
সেচ পাম্পগুলো দিনের বেলায় বন্ধ রেখে রাতের বেলায় চালানো।

৫. মার্কেট ও
বিপণিবিতানগুলোতে আলোকসজ্জা কমিয়ে আনা।

৬. সৌরবিদ্যুৎ খাতে সরকারি
ভর্তুকি বাড়িয়ে দিয়ে এর ব্যবহার জনপ্রিয় করা।

৭. বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী
‘এনার্জি সেভিং বাল্ব’ কম মূল্যে সাধারণ জনগণের মাঝে সরবরাহ করা।

৮.
রাতের বেলা দোকানপাট ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা।

৯. বায়োগ্যাসের
মাধ্যমে গ্রামঞ্চলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারি ব্যবস্থা গ্রহন করা।

উপর্যুক্ত ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট অনেক অংশে কমে আসবে।
গ্রাহকদের ভোগান্তি কমবে। কৃষিজ ও শিল্পজাত পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। ফলে দেশ
এগিয়ে যাবে আলোকিত ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে।

প্রতিবেদক
সিফাত ও নাজনীন

Leave a Comment