প্রবন্ধ রচনা : বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লব

বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লব
অথবা, ডিজিটাল বাংলাদেশ

 ভূমিকা : বাংলাদেশের মানুষের মুখে মুখে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত শব্দবন্ধ সম্ভবত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার রূপরেখা ও সুদূরপ্রসারী স্বপ্ন রয়েছে এ শব্দবন্ধে। আধুনিক যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ; সমৃদ্ধির শিখরে অধিষ্ঠিত দেশগুলোর সাফল্যের মৌলভিত্তি হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে এদের ব্যাপক সাফল্য। একুশ শতকের দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বব্যবস্থায় উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লবাত্মক বিকাশ ঘটানোর বিকল্প নেই । জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার রূপকল্প গ্রহণ করে বাংলাদেশ সরকার সময়ের সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ডিজিটালাইজ্ড, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য এদেশের মানুষকে হতে হবে অনেক বেশি প্রত্যয়ী, পাড়ি দিতে হবে শ্রমসাধ্য দীর্ঘ পথ। গন্তব্য কষ্টসাধ্য হলেও দুর্গম নয় ।

তথ্যপ্রযুক্তি কী : তথ্য শব্দের শাব্দিক অর্থ হলো যথার্থ বা সঠিক সংবাদ। সুপ্রাচীন কাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত সমগ্র মানুষের বিচিত্র চিন্তা, পর্যবেক্ষণ, গবেষণা, আবিষ্কারের মাধ্যমে মানব সভ্যতা বর্তমান উৎকর্ষতা পেয়েছে। যে বিশাল জ্ঞানভাণ্ডারের পটভূমিতে বর্তমান মানবসভ্যতা প্রতিষ্ঠিত, সেই জ্ঞানভান্ডারের প্রতিটি উপাদানই হলো এক একটি তথ্য। ‘জ্ঞানই শক্তি’ ভিক্টোরিয় যুগের এই শ্লোগান বদলে গিয়ে একবিংশ শতাব্দীর বাস্তবতায় শ্লোগান দাঁড়িয়েছে ‘তথ্যই শক্তি’। অর্থাৎ যে ব্যক্তি বা যে জাতি তথ্যশক্তিতে যত বেশি সমৃদ্ধ, সে ব্যক্তি বা সে জাতি তত বেশি উন্নত ও সমৃদ্ধ। আর তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ, প্রক্রিয়াকরণ ও বিনিময়ের জন্য ব্যবহৃত প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির সমন্বিত ও সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনাই হলো তথ্যপ্রযুক্তি। তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো কম্পিউটিং, মাইক্রো ইলেকট্রনিক্স, টেলি কমিউনিকেশন, ডাটাবেস উন্নয়ন, বিনোদন, তথ্যভাণ্ডার, নেটওয়ার্ক, সফ্টওয়্যার উন্নয়ন, মুদ্রণ ও রিপ্রোগ্রাফিক, ডিশ এন্টেনা ইত্যাদি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দুই ভাগে বিভক্ত— এক. তথ্য সংরক্ষণ প্রযুক্তি, দুই. যোগাযোগ প্রযুক্তি। 

বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লব

তথ্য সংরক্ষণ প্রযুক্তির মাধ্যমে সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ, প্রক্রিয়াকরণ করে ব্যবহার উপযোগী করা হয় আর যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে সে তথ্য বিনিময় করা হয় । তথ্যের অবাধ প্রবাহের মাধ্যমেই বিশ্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হওয়া সম্ভব। বিশ্বের যে কোন নতুন একটি আবিষ্কার, নতুন একটি চিন্তা, নতুন কোন তথ্য তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে। তথ্যপ্রযুক্তি মুছে দিয়েছে দেশকালের সীমারেখা। তথ্যপ্রযুক্তির বদৌলতে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের যে কোন উদ্ভাবনের আমরা সমান অংশীদার । আন্তর্জালের মাধ্যমে আমরা ঘরে বসেই সম্পন্ন করতে পারি গবেষণা, শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম; মুহূর্তেই লেনদেন করা সম্ভব হচ্ছে যে কোন ধরনের তথ্য। অফিসের কাজকর্ম করার জন্য আজ অফিসে যাওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সমুদ্রতীরে অবকাশ যাপনকালেও অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজ সেরে নেওয়া যায় অনায়াসে।

আমাদের জীবনে তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন উৎস তথ্য থেকে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করে আমরা আমাদের জীবনধারায় পরিবর্তন আনি, সঠিকভাবে আমাদের করণীয় নির্ধারণ করি, নিত্য-নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করি, জীবন ও সভ্যতাকে উৎকর্ষমণ্ডিত করি। তথ্যের অবাধপ্রবাহ মানুষের কর্মযজ্ঞকে অধিকতর সহজ করে দিয়েছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপরেখা : বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাণিত বাংলাদেশ সমৃদ্ধি অর্জনে তৎপর। এদেশের দারিদ্র্যের বৃত্ত ভেঙে অর্থনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিটি ক্ষেত্রে সমৃদ্ধি অর্জনের স্বপ্নে বিভোর। কিন্তু বাস্তবতা হলো, তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারকে এড়িয়ে বাংলাদেশ তার কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে না। বাংলাদেশের সকল কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনয়ন ও দ্রুত উন্নতির জন্য সর্বক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এই উপলব্ধি থেকেই ২০২০ সালের মধ্যে সমগ্র বাংলাদেশকে আধুনিক কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমের আওতায় নিয়ে আসার এক মহাপরিকল্পনা হাতে নেয় বর্তমান সরকার। পরিকল্পনা অনুসারে দেশটির সার্বিক কর্মকাণ্ড যেমন- সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা, শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি, যোগাযোগসহ প্রতিটি সেক্টর পরিচালিত হবে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার দিয়ে। সরকার সর্বাংশে প্রযুক্তি-নির্ভর ভবিষতের সৃমদ্ধ বাংলাদেশের নাম দিয়েছেন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সকল কর্মকাণ্ড প্রযুক্তির ব্যবহারে পরিচালিত হলেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর স্বপ্ন পূর্ণতা পাবে ।

ডিজিটালাইজেশনে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ :

বাংলাদেশকে ডিজিটালাইজ্ড রাষ্ট্রে পরিণত করতে তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশে সরকার বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পদক্ষেপসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো :

১. সরকার প্রায় পুরো বাংলাদেশকে ডিজিটাল টেলিফোন ও ইন্টারনেটের আওতায় এনেছে।

২. তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য ঢাকার কাওরান বাজারে অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত একটি ‘আইসিটি ইনকিউবেটর’ স্থাপন করেছে। এছাড়া তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়নে গাজীপুরের কালিয়াকৈরেও ‘হাইটেক পার্ক’ প্রতিষ্ঠা করেছে ।

৩. ডিজিটাল অর্থনীতিতে পুঁজির চেয়েও বেশি প্রয়োজন সৃজনশীলতা। সৃজনশীল মেধা না থাকলে উদ্যোক্তা হওয়া কঠিন। প্রযুক্তি-দক্ষ সৃজনশীল জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকার ‘কম্পিউটার ল্যাবরেটরি’ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে তথ্য-প্রযুক্তি শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীদের জন্য ‘আইসিটি ইন্টার্নশীপ’ কোর্স চালু করেছে।

৪. বাংলাদেশে উৎপাদিত তথ্য-প্রযুক্তি ও সফ্টওয়্যার পণ্য বিদেশে বাজারজাতকরণের জন্য ‘আইসিটি বিজনেস প্রমোশন সেন্টার’ স্থাপন করেছে।

৫. কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি পণ্যকে করমুক্ত করা হয়েছে। এসব পণ্য ক্রয়ের জন্য সহজ শর্তে ঋণদানের ব্যবস্থা করেছে।

৬. দেশের ৪ হাজার ৫৪৭টি ইউনিয়ন পরিষদে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। স্কাইপি, পল্লি বিদ্যুতের বিল, জমির পর্চা— এসব সেবা এ সেন্টার থেকে পাওয়া যায় ।

দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে তরুণ প্রজন্মকে নবীন উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে সরকার। আর উদ্যোক্তা তৈরির জন্য তথ্যপ্রযুক্তি হলো সম্ভাবনাময় খাতগুলোর একটি। সরকারের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি রপ্তানির পরিমাণ ৫০০ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়া; এবং এ খাতে বিপুল উদ্যোক্তা তৈরি করার লক্ষ্যে সরকার ২০১৮ সালের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের জন্য তিন ধরনের প্রণোদনা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য ‘১০-১০-১০’ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বছরে ১০ মিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি করতে পারে এমন ১০টি প্রতিষ্ঠান; অন্তত ১ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি করতে পারে এমন আরও ১০টি প্রতিষ্ঠান এবং স্টার্টআপ বা নবীন সৃজনশীল ১০টি প্রতিষ্ঠানকে কাঙ্ক্ষিত সক্ষমতা অর্জনের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। সরকারের এ সকল মেগা প্রজেক্ট ইতোমধ্যে ফলও দিতে শুরু করেছে। বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি-নির্ভর যে কয়টি নতুন উদ্যোগকে সম্ভাবনাময় হিসেবে দেখা হচ্ছে সেগুলোর একটি বাংলাদেশিদের উদ্যোগ ব্যাকপ্যাক। এ প্রতিষ্ঠানটি বাহকের মাধ্যমে এক দেশ থেকে মালামাল হস্তান্তরের সহজ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে ।

দেশের কর্মকাণ্ডে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার : বাংলাদেশের প্রতিটি কর্মকাণ্ডে লেগেছে তথ্য-প্রযুক্তির ছোঁয়া, দ্রুত গতিতেই এগিয়ে চলেছে ডিজিটালাইজেশন। দেশের সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠান— ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠান, ট্রেজারি অফিস পরিপূর্ণরূপে প্রযুক্তিতায়িত। মন্ত্রণালয়সহ সকল অফিসের কার্যক্রম এখন তথ্য-প্রযুক্তির আওতাধীন। প্রযুক্তির কল্যাণে দাপ্তরিক কাজের গতি ও মান অনেক বেড়েছে। কোনো কাজের জন্য এখন আর সশরীরে অফিসে হাজির হতে হয় না। ইন্টারনেটের সহযোগিতায় অফিসের কোনো তথ্য মুহূর্তেই বিনিময় করা যাচ্ছে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হয়ে যাচ্ছে অফিসের কোনো গুরুত্বপূর্ণ মিটিং। কম্পিউটার নেটওয়ার্কের আওতায় অফিসের কাজ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলে জবাবদিহিতা নিশ্চিত হতো, ঘুষ-দুর্নীতির অবৈধ লেন-দেন বন্ধ হতো, সর্বোপরি সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হতো। বাংলাদেশ সেই সম্ভাবনার পথেই আছে।

তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষকের লেকচার ভিডিও করে প্রজেক্টরের মাধ্যমে সাদা পর্দায় প্রদর্শন করে সম্পন্ন করা যাচ্ছে জরুরি ক্লাস। কম্পিউটারের সঙ্গে ইন্টারনেটের সংযোগে ঘরে বসে শিক্ষাগ্রহণ এখন খুবই সুলভ। বাংলাদেশে এখন দূর- শিক্ষণ ব্যবস্থা চালু আছে। কোনো গুরুত্বপূর্ণ দুর্লভ বই ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে নেওয়া যাচ্ছে অনায়াসে। তথ্য- প্রযুক্তির বদৌলতে বাংলাদেশের শিক্ষা-ব্যবস্থায় বিপ্লব সাধিত হয়েছে।

তথ্য-প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহারে বাংলাদেশের চিকিৎসা-ব্যবস্থা আমূল বদলে গেছে। জটিল রোগ নির্ণয় ও অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির বিস্ময়কর উন্নতি সাধিত হেেছ বাংলাদেশে। যে কোনো রোগের উন্নত চিকিৎসা এখন বাংলাদেশেই সুলভ। ডাক্তারের সামনে সশরীরে হাজির না হয়েও প্রত্যন্ত গ্রামের কোনো রোগী কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমের মাধ্যমে শহরের নামীদামী ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে পারছে।

তথ্য-প্রযুক্তির বদৌলতে আমাদের দেশের মান্ধাতার আমলের কৃষিতে বিপ্লব সাধিত হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল বীজ ও উন্নত পরিবেশ-বান্ধব সার উৎপাদনে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের কৃষি-বিজ্ঞানীরা সহজেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কৃষি-বিজ্ঞানীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারছেন, কৃষির সর্ব-সাম্প্রতিক বিভিন্ন আবিষ্কার সম্পর্কে ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানতে পারছেন। কৃষকরাও অতি সহজে উন্নত বীজ ও সারের ব্যবহার সম্পর্কে বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে ধারণা পাচ্ছেন; এমনকি উৎপাদিত পণ্যের বাজার সম্পর্কেও তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে । দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও পয়েন্টে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে জননিরাপত্তার বিষয়ে তদারকি চালু হয়েছে। এতে অপরাধপ্রবণতা কমবে, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশের কারণে বাংলাদেশে এখন অন-লাইনে কেনাবেচা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এতে মানুষ ঘরে বসেই দ্রব্য পছন্দ করছে এবং দ্রব্যের মূল্যও পরিশোধ করতে পারছে। তথ্য-প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহারে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থায় বিপ্লব আসবে সন্দেহ নেই।

দেশে দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠেছে ইন্টারনেট। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এখন কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার শতভাগ সম্ভব হলে বাংলাদেশের সবচেয়ে বিশৃঙ্খল এই বিভাগে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত করা যাবে।

উপসংহার : বাংলাদেশের দারিদ্র্যের কারণ সম্পদের অপ্রতুলতা নয়; দারিদ্র্যের মূলে রয়েছে পদ্ধতিগত ত্রুটি এবং জনগণের অশিক্ষা ও অসচেতনতা। তথ্য-প্রযুক্তির সঙ্গে এ দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করা গেলে এবং তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন সেক্টরে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত করা গেলে বাংলাদেশের সামনে অপেক্ষা করছে এক সোনালি ভবিষ্যৎ। তাই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ অতিপ্রাকৃত কল্পনা নয়, ভবিষ্যতের সমৃদ্ধ বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি ।

Leave a Comment