তুমি বসন্তের কোকিল, শীত বর্ষার কেহ নও

মূলভাব : প্রকৃতির নিয়মে ঋতু পরিবর্তন হয়। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহ, বর্ষার ভিজে সপসপে রূপ, শীতের হিমেল রুক্ষ্মতা এক এক করে সব সরে যায়। চলে যায় গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত ও শীত। 

সম্প্রসারিত ভাব : প্রকৃতির নব বসন্তের আগমনে অপরূপ সৌন্দর্য শোভায় নবজীবন লাভ করে। কচি পাতার মধ্য থেকে মাথা তোলা ফুলের সৌরভভারে নম্র শীতল বাতাস বইতে থাকে। জানা অজানা বিচিত্র বর্ণের ফুলের ডালি সজিয়ে অরণ্য তার যৌবনের ডাক দেয়। আসে কোকিল। বসন্তের জাগ্রত দূত। সে তখন মনের সুখে গান করে চিরসুখী কোকিল বসন্ত ছাড়া কখনও ডাকে না। প্রকৃতির সুখের সময়েই তার শুভগমন প্রকৃতির বিপর্যয়ে সে বেপাত্তা। পৃথীবিতে ‘কোকিল’ শ্রেণীর এক জাতীয় মানুষ আছে। যাদের কাছে স্বার্থই পরমার্থ। নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য তারা আমাদের সুখের দিনের অনুচর; কত হাসে, খায়, গান গায়, তোষামোদে মন ভোলায়। কিন্তু হঠাৎ যদি আমরা বিপদে পড়ি তখন এসব চাটুকারদের দেখা পাওয়া ভার। তারা পরোপকারের পথ থেকে সরে আসবে, ভেঙ্গে দেবে বন্দোবস্ত, ভেঙ্গে দেবে জোট, লঙ্ঘন করবে চুক্তি, খেলাপ করবে কথার, সুখ রাখবে সরিয়ে। আবার সুসময় এলে, বিপর্যয়ের কালো মেঘ সরে গেলে তারা ফিরে আসে। তারা সুখ সন্ধানী, সুযোগ সন্ধানী। 

যেখানে যতদিন বসন্ত সেখানেই ততদিন কোকিল শ্রেণীর মানুষের অধিষ্ঠান।

Leave a Comment