আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠকবৃন্দ বন্ধুরা। আপনাদের সবাইকে Educationblog24.Com এ স্বাগতম। আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সবাই ভালো আছেন।
প্রিয় বন্ধুরা আপনাদের জন্য আমাদের আজকের এই পোস্টে থাকছে জুম্মার দিনের করণীয় ও বর্জনীয় বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা।
সপ্তাহের ৭ দিনের ভিতরে শুক্রবার হলো শ্রেষ্ঠ দিন। শুক্রবারকে আবার জুম্মা বারও বলা হয়। শুক্রবার মানেই হলো সাপ্তাহিক ঈদ, শুক্রবার মানেই গরিবের হজ্জের দিন। এছাড়াও শুক্রবার মানে নতুন পোশাক পরে নামাজ পড়তে মসজিদে যাওয়া। শুক্রবার বা জুম্মাবারের যে কত ফজিলত রয়েছে সেটা হয়তো কমবেশি আপনারা অনেকেই জানেন। আমরা সকলেই আশা করি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সাপ্তাহিক ঈদের নামাজ সবাই যেন পড়ি।
তো প্রিয় পাঠকবৃন্দ বন্ধুরা আপনারা যারা জুমার দিনের করণীয় ও বর্জনীয় যে বিষয়গুলো রয়েছে সেটা সম্পর্কে জানেন না। আর এই অজানা তথ্য বা জুমার দিনের কি করণীয় আর কি বর্জনীয় সেই বিষয় সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক। তাই আজকে আমরা তাদের জন্য এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের মাঝে নিয়ে আসলাম জুমার দিনের করণীয় ও বর্জনীয় বিষয় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। আশা করি আমাদের পোস্ট দ্বারা আপনাদের অনেক উপকার হবে এবং অজানা তথ্যগুলো জানতে পেরে অনেক সুবিধা হবে। আসুন বন্ধুরা তাহলে আমরা জুম্মার দিনে কি কি বর্জনীয় ও কি কি করণীয় বিষয় আছে সেগুলো জেনে আসি।
জুমার দিনের করণীয়
জুমার দিনের করণীয় কিছু বিষয়—
★ফজরের নামাজ সঠিক সময় সঠিক নিয়মে আদায় করা।
★জুমু‘আর দিন গোছল করা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া।
সালমান (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুন্দর করে গোসল করবে, এরপর তেল ব্যবহার করবে এবং সুগন্ধি নেবে, তারপর মসজিদে গমন করবে, দুই মুসল্লির মাঝে জোর করে জায়গা নেবে না, ইমামের সঙ্গে নামাজ আদায় করবে এবং ইমাম যখন খুতবা দেবেন, চুপ করে মনোযোগসহ শুনবে, দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়কার তার সব গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৯)
★মিছওয়াক ব্যবহার করা
রাসুল (সঃ) বলেন— আমি যদি আমার উম্মাতের জন্য কিংবা মানুষের জন্য কষ্টকর মনে না করতাম, তাহলে তাদেরকে প্রত্যেক নামাযের সময় (বাধ্যতামূলক ভাবে) মিছওয়াক করার হুক্ম দিতাম।
★আতর বা(হালাল) সুগন্ধি ব্যবহার করা
রাসুল (সঃ) বলেন— প্রত্যেক মুছলমানের জন্য কর্তব্য হলো জুমু‘আর দিনে গোছল করা, সুগন্ধি (যদি থাকে) ব্যবহার করা এবং মিছওয়াক করা।
★উত্তম কাপড় পরিধান করা
কেননা রাসুল (সঃ) বলেন— প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক লোকের উচিত জুমু‘আর দিনে গোছল করা, নিজের উত্তম কাপড় পরিধান করা এবং যদি তার নিকট সুগন্ধি থাকে তাহলে তা থেকে ব্যবহার করা।
★তাহিয়্যাতুল মাসজিদ (নামাজ) আদায় করা
কেননা রাসুল (সঃ) বলেন— জুমু‘আর দিনে ইমাম খুতবা দিচ্ছেন এমতাবস্থায় তোমাদের কেউ যদি মাছজিদে প্রবেশ করে, তাহলে সে যেন সংক্ষিপ্ত করে দু’রাক‘আত সালাত পড়ে নেয়।
★মনযোগ সহকারে খুত্বাহ শোনা
এর প্রমাণ হলো ইবনু ‘আব্বাছ হতে বর্ণিত, রাছূল বলেছেন:- যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিনে ইমামের খুত্বাহ চলাকালীন কথা বলে, সে দলীল-দস্তাবেজের বোঝা বহনকারী গাধার ন্যায়। আর যে ব্যক্তি তাকে বলবে “চুপ করো’’ তার জুমু‘আ-ই নেই (অর্থাৎ সে জুমু‘আর সালাতের কোন ফাযীলাত লাভ করতে পারবে না)।
★বেশি দুরূদ ও ছালাম পাঠ করা
আঊছ বিন আউছ হতে বর্ণিত, রাছূলুল্লাহ বলেছেন— তোমাদের সর্বোত্তম দিন হলো জুমু‘আর দিন। এ দিনে আদমকে (5) সৃষ্টি করা হয়েছে, এ দিন তাঁর জান ক্বব্য (মৃত্যু দান) করা হয়েছে, এ দিনই শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, এ দিনই মহাপ্রলয় সাধিত হবে। অতএব এ দিনে (জুমু‘আর দিনে) বেশি করে আমার প্রতি সালাত (দুরূদ) পাঠ করো, কেননা তোমাদের সালাত আমার কাছে পেশ করা হয়।
★নামাজের পর করণীয়
আল্লাহ তায়ালা বলেন— এরপর যখন নামাজ শেষ হবে তখন তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় আর আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে (জীবিকা) অনুসন্ধান কর এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর; যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’ (সুরা জুমা : আয়াত ১০)
জুমার দিনের বর্জনীয়
জুমার দিনে বর্জনীয় বিষয়—
★জুমার নামাজের গুরুত্ব এতবেশি যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমা থেকে বিরত থাকা বা অলসতাকারীদের ঘর জালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। (মুসলিম, মিশকাত)
★রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, ‘জুমা পরিত্যাগকারীদের হৃদয়ে আল্লাহ মোহর মেরে দেন। এরপর তারা গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।’ (মুসলিম, মিশকাত)
★তিনি আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি অবহেলা করে পরপর তিন জুমা পরিত্যাগ করলো, সে ব্যক্তি ইসলামকে পেছনে নিক্ষেপ করলো।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, মিশকাত)
★অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘যে ব্যক্তি বিনা করণে তিন জুমা পরিত্যাগ করলো, সে ব্যক্তি ‘মুনাফিক’।’ (ইবনু খাজায়মা)
Tag: জুমার দিনের করণীয় ও বর্জনীয়
(সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদেরGoogle News,FacebookএবংTelegram পেজ)