অনুচ্ছেদ রচনা : টি টোয়েন্টি (T20) ক্রিকেট

টি টোয়েন্টি (T20) ক্রিকেট

টি টোয়েন্টি (T20) 

খেলাধুলা ও চিত্তবিনােদনের ক্ষেত্রে ক্রিকেটের অবস্থান নিঃসন্দেহে শীর্ষস্থানীয়। ফুটবল অপেক্ষা ক্রিকেট অধিক উত্তেজনাপূর্ণ খেলা । এ উত্তেজনার মাত্রা আরও বৃদ্ধি করতে ক্রিকেটে বিভিন্ন সময় সংস্কার আনা হয় । টি টোয়েন্টি (T20) ক্রিকেট এমনই একটি প্রয়াস। টেস্ট ক্রিকেটের পাচ দিনের অসহনীয় এক প্রতিযােগিতা যখন বিশ্বের ক্রিকেটমােদীদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে শুরু করে, ঠিক তখনই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ক্রিকেট সংস্কারের কথা ভাবে। তারই ধারাবাহিকতায় ক্রিকেটে যুক্ত হয় সীমিত । ওভারের ম্যাচ অর্থাৎ ওয়ানডে ক্রিকেট। কিন্তু তাতেও যেন ক্রিকেটপ্রেমীদের সময় ব্যয়ের সঙ্গে ক্রিকেট বিনােদন উপভােগের। সামঞ্জস্য বিধান হচ্ছিল না। তাই ক্রিকেটে চুড়ান্তভাবে সংযােজিত হলাে টি টোয়েন্টি অর্থাৎ টোয়েন্টি টোয়েন্টি ম্যাচ। এটিই ক্রিকেট | খেলার সর্বশেষ সংক্ষিপ্ততম সংস্করণ যা ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডে আন্তঃকাউন্টি ক্রিকেট প্রতিযােগিতার মাধ্যমে শুরু হয়। তবে আন্তর্জাতিক মর্যাদায় প্রথম অনুষ্ঠিত হয় ২০০৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি, যেখানে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড অংশগ্রহণ করে। এ খেলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ক্রিকেট খেলাকে আরও বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করার পাশাপাশি স্বল্পতম সময়ে দর্শকদের নির্মল আনন্দ দেওয়া। শুরুতে এ ধরনের খেলার প্রতি অনেকের আপত্তি থাকলেও বর্তমানে সবাই তা মেনে নিয়েছে এবং বিশ্বে খেলাটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় টি টোয়েন্টি ক্রিকেটের বিশেষত্ব হলাে- সময় বাঁচাতে একজন আউট হওয়া ব্যাটসম্যানকে মাঠ থেকে বেরােতে, আর তার জায়গায় আরেকজন ব্যাটসম্যানকে ক্রিজে দাঁড়াতে সময় দেওয়া হয় মাত্র দেড় মিনিট। পাওয়ার প্লে বা ফিল্ডিং বাধ্যতাধকতা মাত্র ৬ ওভারের। তাতে ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে থাকতে পারে কেবল দুই জন ফিল্ডার। বাকি ১৪ ওভারে পাঁচ জন। ফিল্ডার. বৃত্তের বাইরে থাকতে পারে। একজন বােলার সর্বোচ্চ ৪ ওভার বােলিং করতে পারে। কোনাে বােলার নাে বল দিলে তার পরের বলটিতে ফ্রি-হিটের সুযােগ পায় ব্যাটসম্যান। আর এতে ব্যাটসম্যানের শুধু রান আউট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। চূড়ান্ত ফল অমীমাংসিত হলে প্রত্যেক দল ১ ওভার করে খেলার সুযােগ পায়। এর নাম সুপার ওভার। এতে নির্ধারিত ১ ওভারে যে দল বেশি রান সংগ্রহ করতে পারে সে দল বিজয়ী হয়। বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক ট্যুরে কমপক্ষে একটি টি টোয়েন্টি ম্যাচ থাকে। টেস্ট ক্রিকেট খেলার অধিকারী দেশগুলাে তাদের অভ্যন্তরীণ প্রতিযােগিতায় টি টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে থাকে। আইসিসি বিশ্ব টোয়েন্টি টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযােগিতা হিসাবে পরিচিত। এ প্রতিযােগিতায় ১২টি দল অংশগ্রহণ করে থাকে। এর মধ্যে ১০টি। আইসিসির পূর্ণ সদস্য ও বাকি ২টি সহযােগী সদস্য দেশ। বর্তমানে দুই বছর পরপর এ প্রতিযােগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশও টি টোয়েন্টি খেলায় বিশেষ নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রেখে চলছে। দর্শক তৈরিতে ক্রিকেটের সর্বশেষ সংস্করণ হিসাবে টি-টোয়েন্টির অবদান অনস্বীকার্য।

Leave a Comment